যশোরের দেয়ালে দেয়ালে দ্রোহ, মুক্তি আর সম্প্রীতির বার্তা
উম্মত নিউজ, ১৭/৮/২৪
কোটা থেকে রাস্ট্র সংস্কার করার পর এখন দেশ সাজাতে ব্যাস্ত কওমী মাদ্রাসা আলিয়া-স্কুল-কলেজ ও ভার্সিটির ছাত্ররা। কেউ দেয়াল ঘষে পরিষ্কার করছেন, কেউবা আবার সেখানে রঙের প্রলেপ দিচ্ছেন। কেউবা সেই প্রলেপ দেওয়া জায়গায় আঁকছেন লাল-সবুজের পতাকা। কেউ আবার ব্যস্ত স্লোগান লেখায়। শত শত শিক্ষার্থীর এ রকম ব্যস্ততা দেখা যাচ্ছে যশোর শহরের বিভিন্ন রোডের দেয়ালে গুলিতে।
দেশ স্বাধীনের পর থেকে শুরু হয়ে এখনো চলছে গ্রাফিতির কাজ। প্রতিদিন সকাল থেকে মাঝরাত পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন দেয়ালে দেয়ালে আঁকিবুঁকির কাজ। বাংলায় স্লোগান যেমন লেখা হয়েছে, ঠিক তেমনি ভাবে আছে ইংরেজিতে লেখা স্লোগান। আছে ইসলামিক ক্যালিগ্রাফিও। বিভিন্ন লেখা লেখির পাশে আছে জেনারেশন জেডের প্রশংসা, ২৪ এর গল্পের পাশে বায়ান্নর ইতিহাসও আছে। নজরুলের গানের কথার পাশাপাশি আছে জালাল উদ্দীন রুমীর বিখ্যাত উক্তি। ব্রিদোহী স্লোগানের পাশাপাশি আছে সম্প্রীতির আহ্বান।
দেয়ালজুড়ে- ‘আমরা স্বাধীন’, ’পাহারায় থাকতে হবে, দুর্নীতিকে রুখতে হবে’, ’সন্ত্রাস, মাদক, সিন্ডিকেট, সুদ, ঘুষ, হয়রানি ,জুলুমমুক্ত বাংলা চাই’, ’স্বাধীন হয়েছি, সময় এখন সভ্য হওয়ার’, ’এসেছে ফাগুন আমরা হয়েছি শত গুণ’, ’২৪ এর গল্প’, ’আমি নয় আমরা’, ’পানি লাগবে পানি’, ’একজন ভিআইপির জন্য পৃথিবী থেমে থাকতে পারে না’, ’হিন্দু মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, উই আর ওয়ান’, 'বুকের ভিতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর' , ‘ছিঁড়ে যাবে অন্যায়ের শিকল, উড়ে যবে পাখির দল’ —এ রকম স্লোগান লেখা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের এই কাজে যোগ দিয়েছেন আ'ম জনতাও।
যাদের কথা না বললেই নয় তারা হলেন কওমী মাদ্রাসার ছাত্ররা। দেয়ালের বিশাল একটা অংশে কাজ করছেন কওমী মাদ্রাসার ছাত্ররা, দিন-রাত এক করে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন মাদ্রাসার তরুণ ছাত্ররা। তারা এ্যরাবিক ক্যালিগ্রাফি সহ নান্দনিক আর্ট করে দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছেন সকল শ্রেনী-পেশার মানুষের। যেখানে কওমী ছাত্রদের অবহেলা করা হয়, তারাই সকল ক্ষেত্রে অলরাউন্ডার। তাদেরকে এক প্রকৃতির সুশীল সমাজ ধরা ছোঁয়ার বাহিরে রাখেন এবং কু-নজরে দেখেন, তাদেরকে সুশীল না বলে কুশীল সমাজ বললেও ভুল হবে না। আসলে আমাদের দৃষ্টি ভঙ্গি বদলানো উচিৎ তাহলে জীবন বদলে যাবে।